দখলদার বাহিনী হিসেবে আরও একটি দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দশক পর এবার ইরাক ছাড়তে হচ্ছে মার্কিন বাহিনীকে। এই দীর্ঘ সময় একটুও শান্তিতে থাকতে পারেনি তারা। ইরানের প্রক্সিদের একের পর এক হামলায় তটস্থ ছিল মার্কিন বাহিনী। অস্থির ইরাকও তাদের জন্য হয়ে উঠেছিল মরণফাঁদ। তাই ইরাক ছাড়ার সব কিছু চূড়ান্ত করে ফেলেছে মার্কিন বাহিনী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আলোচনা চূড়ান্ত হলেও ওয়াশিংটন ও বাগদাদের নেতাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, কখন সেই ঘোষণা দেওয়া হবে, এখন সেটাই প্রশ্ন। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ ইরাক ছাড়বে কয়েক শ’ মার্কিন সেনা। বাকিরা ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ ইরাকের মাটি ছেড়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে অনেক সমালোচক খুশি হয়েছে।
তবে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মার্কিন নীতি-নির্ধারকদের কপালে। তাদের উদ্বেগ, এতে করে ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বাড়বে। ইরাকে থাকা প্রায় আড়াই হাজার সেনার ভাগ্য নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়। তবে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের কারণে চলমান উত্তেজনায় এই আলোচনার গতি কিছুটা ধীর ছিল। গেল ৭ অক্টোবর থেকে ইরাকে মার্কিন বাহিনী অন্তত ৭০ বার হামলার শিকার হয়েছে।
ইরাকে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাগদাদের অস্বস্তি ছিল। দেশটি থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানি সাম্প্রতিক মাসগুলো বেশ সরব হয়েছেন। ইরাক থেকে মার্কিন বাহিনী চলে গেলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে ইরান। দীর্ঘদিন ধরেই ইরাক থেকে মার্কিন বাহিনী উৎখাতে নানা কৌশল অবলম্বন করে আসছিল তেহরান। এবার সফল হতে যাচ্ছে দেশটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাক থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে এই অঞ্চল ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে। শক্তিশালী দেশগুলো নিজের স্বার্থে ইরাকে হামলা চালাতে পারে। যার সাম্প্রতিক নজির, গেল সোমবার ইরাকে তুরস্কের হামলা। এ ছাড়া ইরান আরও বেশি শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি শিয়া, সুন্নি ও কুর্দি অধ্যুষিত ইরাকে প্রভাব বাড়বে ইরানের।
আপনার মতামত লিখুন :