তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : পৃথিবী থেকে প্রায় ৬৫০০ আলোকবর্ষ দূরের এক প্রাচীন সুপারনোভা অবশেষ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের গভীর রহস্যে ফেলেছে। এই অবশেষ Pa 30 নামে পরিচিত, একটি জম্বি তারকাকে ঘিরে রয়েছে। তারকার চারপাশে সালফার ফিলামেন্টের বিস্তৃতি প্রায় তিন আলোকবর্ষজুড়ে। প্রথমবার ১১৮১ সালে স্কাইওয়াচাররা এই বিস্ফোরণের কথা নথিভুক্ত করলেও, এর স্পাইকি ফিলামেন্টের অস্বাভাবিক গঠন ও সংরক্ষণসম্পর্কিত বিশদ গবেষণা সম্প্রতি শুরু হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস -এ প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, হাওয়াইয়ের ডব্লিউ.এম. কেক অবজারভেটরি থেকে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণ দিয়ে এই নেবুলার ফিলামেন্টের ত্রিমাত্রিক গঠন ও গতিবিধি চিত্রায়িত করা হয়েছে। হার্ভার্ড এবং স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী টিম কানিংহামের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় জানা যায়, এই নেবুলা তিনটি স্তরে বিভক্ত।
প্রথমত, কেন্দ্রীয় তারকা রয়েছে। এরপর এক থেকে দুই আলোকবর্ষের একটি ফাঁকা জায়গা এবং তারপর একটি গোলাকার ধূলির আবরণ। এই আবরণ থেকে প্রসারিত ফিলামেন্টগুলো পুরো নেবুলাকে কাঁটাযুক্ত আকৃতি প্রদান করেছে।
এই বিস্ফোরণকে টাইপ ১-এ সুপারনোভা বলে মনে করা হচ্ছে, যা সাধারণত শ্বেত বামন তারকার সম্পূর্ণ ধ্বংসের সাথে সম্পর্কিত। তবে এখানে বিস্ফোরণের পরেও তারকার একটি অংশ টিকে রয়েছে। এই ঘটনাটি বিস্ফোরণের প্রকৃতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বিস্ফোরণের শক-ওয়েভ চারপাশের ইন্টারস্টেলার উপাদানের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে এগুলোকে ফিলামেন্ট আকারে রূপান্তরিত করেছে। তবে এই ফিলামেন্টের সুষম গঠন এবং শত শত বছর ধরে সংরক্ষিত থাকার বিষয়টি এখনও রহস্যাবৃত।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখন এই ফিলামেন্টের গঠন প্রক্রিয়া এবং তার স্থায়িত্ব পরীক্ষা করতে নতুন তথ্য সংগ্রহ করছেন। Pa 30-এর অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে আরও গবেষণা চলছে, যা মহাকাশের এই অস্বাভাবিক গঠনের মূল কারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করতে পারে।
জম্বি তারকা এবং তার আশেপাশের রহস্যময় ফিলামেন্টের এই আবিষ্কার মহাজাগতিক ঘটনাগুলো বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
আপনার মতামত লিখুন :