মহামারি করোনা ভাইরাস আসার পর ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরেছে এমনটাই ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু হঠাত তাদের অনলাইন বই প্রকাশের পর চিন্তার ভাঁজ পরেছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, কোভিড-১৯ ভাইরাসের বাহক হয়ে সমর্থকদের ভারতে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
সম্প্রতি ওই জঙ্গি গোষ্ঠী ১৭ পাতার একটি লকডাউন স্পেশ্যাল নামে প্রচার পুস্তিকা অনলাইনে প্রকাশ করেছে। সেই প্রচার পুস্তিকাতেই এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে আইএসের এই ফতোয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় নেতা ত্বহা সিদ্দিকি।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আইএস ভারতে প্রচারের উদ্দেশে সোয়াত উল হিন্দ নামে একটি অনলাইন ম্যাগাজিন প্রকাশ করা শুরু করেছে। সেই মাসিক ম্যাগাজিনের মে এবং জুন মাসের সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে এই বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই প্রচার পুস্তিকায়, নিজামুদ্দিন মার্কজের প্রধান মৌলানা সাদের প্রশংসা করা হয়েছে করোনা নিষেধাজ্ঞা ভেঙে মারকজ আয়োজন করার জন্য। ম্যাগাজিনে উল্লেখ করা হয়েছে কী ভাবে মারকজ থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দিল্লি জুড়ে।
এছাড়া ওই বিশেষ সংখ্যায় ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (সিএএ) ঘিরে দিল্লির হিংসার ঘটনার প্রতিশোধ নিতেও উৎসাহিত করা হয়েছে সমর্থকদের।
আনন্দবাজার জানায়, আইএসের এই প্রচার পুস্তিকা প্রকাশ করে সংগঠনের সমর্থকদের তৈরি আল-কিতাল প্রকাশনা। ম্যাগাজিনের তৃতীয় এবং চতুর্থ সংখ্যাতেও সিএএ বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জানানো হয়েছিল এবং সমর্থকদের লোন উল্ফ কায়দায় অ-ইসলামি এবং যারা আইএস নির্দেশিত জিহাদের পথে বাধা তাঁদের উপর হামলা চালাতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ওই বিশেষ সংখ্যার দ্বিতীয় পাতায় পঞ্চম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে কুফ্ফর বা জিহাদের বিরোধী যাঁরা তাঁদের মধ্যে যত বেশি সংখ্যায় সম্ভব কোভিড ১৯-এর ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে তারা দুর্বল হয়ে যাবে। তাতে দুর্বল প্রতিপক্ষতে সহজেই হত্যা করা যায়। এ প্রসঙ্গেই আইএস তাদের সমর্থকদের নির্দেশ দিয়েছে করোনা ভাইরাসকে জিহাদের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে। বলা হয়েছে, কোভিডের বাহক হয়ে পুলিশের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, আইএসের এই প্রচার কর্মসূচি হালকা ভাবে নিচ্ছেন না ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কারণ তাঁরা স্বীকার করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক আইএস মডিউল সক্রিয়।
এদিকে ফুরফুরা শরিফের পরিচালন মণ্ডলীর অন্যতম ত্বহা সিদ্দিকিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে আনন্দবাজার। তিনি বলেন, মহামারি জাতি ধর্ম দেখে ছড়ায় না। গোটা পৃথিবী এখন এই মহামারির কবলে। যাঁরা ভাবেন যে এই রোগ কেবলমাত্র একটা নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষকে আক্রান্ত করবে, তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।
তিনি আইএস-এর প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ইসলাম কোনও মানুষের অকল্যাণকে সমর্থন করে না। তিনি মহানবী হজরত মহম্মদ(সঃ) নির্দেশ উদ্ধৃত করে বলেন, পয়গম্বর নিজে নির্দেশ দিয়েছেন, যখন কোথাও মহামারি হবে তখন সেখান থেকে বাইরে কেউ যাবে না, বাইরে থেকেও কেউ আসবে না। আমি বিশ্বাস করি, এ রাজ্যে বা দেশে কোনও মুসলমান ভাই আইএস-এর এই নির্দেশ মানবে না।
2021-01-30 06:29:31
আপনার মতামত লিখুন :