নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ বিএনপির


অনলাইন ডেক্স প্রকাশের সময় : জুলাই ১১, ২০২৪, ২:৪৫ অপরাহ্ন
নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ বিএনপির

সারা দেশে দলীয় সদস্য সংখ্যা কত-এর কোনো সুস্পষ্ট তথ্য নেই বিএনপিতে। সর্বশেষ ৭ বছর আগে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল দলটি। সেই সময় ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা শেষ হয়নি অদ্যাবধি। এমনকি সদস্যপদ নবায়নের কাজও থমকে আছে। এমন পরিস্থিতিতে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি।

এরই অংশ হিসাবে সদস্যসংগ্রহ কার্যক্রমে ফিরতে চায় দলটি। এ নিয়ে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আগামী বছরের প্রথম দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের কাজ শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বিএনপি নেতাদের দাবি-দেশের অধিকাংশ মানুষ বিএনপিকে সমর্থন করে। তাদের অনেকেরই রাজনীতিতে আসার আগ্রহ আছে, বিশেষ করে তরুণ শ্রেণির। দীর্ঘদিন সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। আন্দোলন-সংগ্রামে আসা তৃণমূল পর্যায়ের অনেকেই জানে না তারা বিএনপির কর্মী কিনা? এজন্য নতুন করে দলের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আবারও নতুন সদস্য নেওয়া হবে। বিষয়টি আলোচনায় আছে।

দপ্তরের দায়িত্ব থাকা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২০১৭ সালের পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সদস্য সংগ্রহ না হলেও, দপ্তর থেকে অসংখ্য মানুষ সদস্য ফরম সংগ্রহ করেছেন। জেলা ও মহানগরগুলোর কাছে ফরম আছে। অনেকেই জমা দিয়েছেন। সামরিক ও বেসামরিক অসংখ্য আমলা আছেন, যারা বিএনপি অফিস (নয়াপল্টন) থেকে সদস্য ফরম সংগ্রহ করেছেন। দল সেসব যাচাই-বাছাই করছে। এছাড়া অনলাইনেও সদস্য ফরম পূরণের সুযোগ রয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত হলে আনুষ্ঠনিকভাবে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম হবে।

বিএনপির সদস্য পদ নিয়ে দলের গঠনতন্ত্রের ৫ এর ‘ক’ ধারায় বলা আছে, ১৮ বছর বা ততোধিক বয়সের যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এ দলের প্রাথমিক সদস্য হতে পারবে। ইচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে সংগঠনের ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচির প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করতে হবে। প্রাথমিক সদস্য পদের আবেদনপত্র এই গঠনতন্ত্রের তফশিল ১-এ ‘ক’ ফরমে করতে হবে। বিবেচনার পর আবেদনপত্র গৃহীত হলে সদস্য পদের প্রমাণস্বরূপ পরিচয়পত্র (তফশিল-১) ‘খ’ ফরমে প্রত্যেক সদস্যকে দিতে হবে। সদস্য পদ লাভের পরবর্তী বছর থেকে দলের বাৎসরিক ১০ টাকা চাঁদা পরিশোধ করে সদস্য পদ নবায়ন করতে হবে।

জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে সারা দেশে সদস্য সংগ্রহে নামে বিএনপি। তখন দলটির শীর্ষ নেতাদের টার্গেট ছিল ৫০ লাখ সদস্য সংগ্রহের। পরবর্তী সময়ে দলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের এক বছর পর ২০১৭ সালে একইভাবে ‘প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ’র উদ্যোগ নেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই বছর ১ জুলাই ১০ টাকার বিনিময়ে ফরমে স্বাক্ষর করে নিজের সদস্য পদ নবায়নের মধ্য দিয়ে এ অভিযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।

এরপর স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও তাদের সদস্য পদ নবায়ন করেন। ওই সময় এক কোটি নতুন সদস্যের টার্গেট নিয়ে সারা দেশে এ অভিযান শুরু হয়। কেন্দ্র থেকে সদস্য সংগ্রহের ফরম মহানগর, জেলা, উপজেলায় পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তখন নানা কারণে তা থমকে যায়। সে সময় নয়াপল্টনে বিএনপির দপ্তর শাখা থেকে জানানো হয়, ৩ মাসে প্রায় ৭০ লাখ সদস্য ফরম বিক্রি হয়েছিল। প্রতিটি সদস্য ফরম বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা করে। সে হিসাবে সদস্য সংগ্রহ ফরম বিক্রি করে বিএনপির আয়ও হয়েছে প্রায় সাত কোটি টাকা।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: