বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮২তম প্রয়াণ দিবস আজ


অনলাইন ডেক্স প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৬, ২০২৩, ৫:৩৭ অপরাহ্ন
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮২তম প্রয়াণ দিবস আজ

আজ রবিবার (০৬-০৮-২০২৩) বাংলায় বাইশে শ্রাবণ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮২তম প্রয়াণ দিবস। বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম বাঙালির জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে নানাভাবে।

দেশ-বিদেশে প্রদত্ত বক্তৃতামালা তাঁর ভাবনা ও জীবনদর্শনের অনন্য দলিল। তাঁর দুটি গান দুটি দেশের—বাংলাদেশ ও ভারতে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা পেয়েছে। ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ বাংলাদেশের এবং ‘জন গণ মন’ ভারতের জাতীয় সংগীত। রবীন্দ্রনাথের বিচিত্র সৃষ্টির অন্যতম প্রধান ধারা তাঁর অসাধারণ গানগুলো।

গান দিয়ে হাত বুলিয়ে যাই এ ভুবনে’ বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। জীবনব্যাপী অভিযানে গানই ছিল তার চির সারথি। দ্বিসহস্রস্পর্শী তার বিচিত্র গানের যে আয়োজন, তাতে প্রত্যয় ছিল, নিরীক্ষা ছিল আর ছিল সৃজনের আনন্দ। অস্পর্শ কিন্তু অনুভববেদ্য গানে আমরা পেয়ে গিয়েছি সংগীত সমুদ্রে সঞ্চরণমাণ সানন্দ এক মুগ্ধ মনকে।

‘সবচেয়ে স্থায়ী আমার গান’ এই ছিল রবীন্দ্রনাথের বিশ্বাস। এ বাণী সাধক কত যে সারস্বত অভিব্যক্তি ও কলারীতির মন্থন-আবর্তে নিজেকে ঘূর্ণিত করে গিয়েছেন তবুও দেখি, তার আত্মপক্ষ কবুলতি, আমার গান তোমাদের গাইতেই হবে।

রবীন্দ্র জীবনীকার প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ‘রবীন্দ্র জীবন কথা’য় কবির মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন, শান্তি নিকেতনে কবি এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দেহ আর চলছিলনা, চিকিৎসার ও সেবারও ত্রুটি নেই। অবশেষে ডাক্তাররা পরামর্শ করে ঠিক করলেন, অপারেশন ছাড়া উপায় নেই। ৯ শ্রাবণ (২৫ জুলাই) শান্তি নিকেতন থেকে কবিকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হলো। শান্তি নিকেতনের সাথে অনেক বছরের স্মৃতি জড়িত কবি কি বুঝতে পেরেছিলেন এই তার শেষ যাত্রা? যাবার সময় চোখে রুমাল দিচ্ছেন দেখা গেছে।

৩০ জুলাই জোড়াসাঁকোর বাড়িতে কবির শরীরে অস্ত্রোপাচার হল। তার কিছু পূর্বে শেষ কবিতা রচনা করেন ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি, বিচিত্র ছলনাজালে হে ছলনাময়ী।’

রবীন্দ্র জীবনী থেকে জানা যায়, মৃত্যুর মাত্র সাত দিন আগে পর্যন্তও কবি সৃষ্টিশীল ছিলেন। জোড়াসাঁকোয রোগশয্যায় শুয়ে শুয়ে তিনি বলতেন রানী চন্দ লিখে নিতেন। কবি বলে গেছেন, ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন কবিতাটি বলতে বলতে। দিনটা ছিল কবির শেষ বিদায়ের দিন কয়েক আগে চৌদ্দই শ্রাবণ। রানী চন্দ সে দিন সূত্রধরের মতো লিখেও নেন রবীন্দ্রনাথ উবাচ কবিতাটি ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি’। চিকিৎসকরা অস্ত্রোপাচার করলেন তা নিস্ফল হয়। অবস্থা দ্রুত মন্দের দিকে যেতে লাগলো। তিনি জ্ঞান হারালেন।

শেষ নিশ্বাস পড়ল– রাখীপূর্ণিমার দিন, বাংলা ১৩৪৮ সালের ২২ শ্রাবণ, জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা বেজে ১০ মিনিট। অমৃত আলোকের নতুন দেশে চলে গেলেন কবি।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: