কালপুরুষ, কালবেলাসহ একাধিক কালজয়ী উপন্যাসের লেখক প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার (৮১) মারা গেছেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।
সোমবার (৮ মে) ভারতের স্থানীয় সময় পৌনে ৬টা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান এই কথা সাহিত্যিক।এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় সমরেশ মজুমদারের বড় মেয়ে দোয়েল মজুমদার জানান, গত দুই দিন কেবিনেই রাখা হয়েছিল তার বাবাকে। ওই দিন বিকেলে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউতে) স্থানান্তরিত করা হয়।
সমরেশ মজুমদারের শ্বাসনালীতে গভীর সংক্রমণ ছিল। গত এক যুগ ধরেই ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।
সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় মমতা বলেন, ‘সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে সাহিত্য জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।’
সমরেশ মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালের ১০ মার্চ। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেডএর সাথে যুক্ত ছিলেন। গ্রুপ থিয়েটারএর প্রতি তার প্রচণ্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প ‘অন্যমাত্রা’ লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসাবে, আর সেখান থেকেই তার লেখকজীবনের শুরু। তার লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে।
সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ ছাপা হয়েছিলো দেশেই ১৯৭৫ সালে। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইআইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন। চিত্রনাট্য লেখক হিসেবে জয় করেছেন বিএফজেএ দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির অ্যাওয়ার্ড। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয় তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :