টানা তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি


অনলাইন ডেক্স প্রকাশের সময় : জুন ৬, ২০২৪, ৪:০২ অপরাহ্ন
টানা তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি

টানা তৃতীয় দফায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগামী শনিবার শপথ নিতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। জোটের শরিক দলগুলোর সমর্থন নিয়েই প্রধানমন্ত্রী হতে হচ্ছে তাকে। গতকাল বুধবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে জোটের অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমার এনডিএ জোট সরকার গঠনে লিখিতভাবে সমর্থন দেন।

এরপরই তৃতীয়বার সরকার গঠনের দাবি জানাতে বুধবার রাতেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হওয়ার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদি। এদিকে আগামীকাল শুক্রবার মোদিকে এনডিএ-র সংসদীয় দলনেতা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী শনিবারই প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন মোদি। এটা হলে জওহরলাল নেহেরুর পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে গত মঙ্গলবার। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৪০ আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। আর প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি আসন। কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। তবে জোটগতভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২ আসনের বেশি পেয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। তারা পেয়েছে ২৯৩টি আসন। অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩২ আসন।

সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও এনডিএ জোট সরকার গঠন করতে পারবে কি-না তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কারণ বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এবার কিংমেকার হয়ে উঠেছেন এনডিএ জোটের দুই নেতা তেলুগু দেশম পার্টির চন্দ্রবাবু নাইডু এবং জনতা দলের (ইউনাইটেড) নীতীশ কুমার।

নির্বাচনে এই দুই দল ২৮টি আসনে জিতেছে। তারা সমর্থন না দিলে সরকার গড়তে পারবে না এনডিএ জোট। আবার জোট বদলালে ক্ষমতায় আসতে পারে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। এই দুই নেতার অতীতে বিভিন্ন সময় জোট বদলের ইতিহাস থাকায় সন্দেহ আরো বেশি তৈরি হয়। কিন্তু গতকাল বিকেলে দিল্লিতে এনডিএ জোটের বৈঠকে হাজির হন নাইডু এবং নীতিশ। তারা নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোট সরকার গঠনে লিখিতভাবে সমর্থন দেন।

এই বৈঠকের পর তৃতীয়বার সরকার গঠনের দাবি জানাতে গতকাল রাতেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হওয়ার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদির। সঙ্গে থাকার কথা ছিল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং অন্ধ্র প্রদেশের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর।

এদিকে গতকাল দুপুরে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন নরেন্দ্র মোদি। এরপর তার নেতৃত্বে থাকা মন্ত্রী পরিষদের অন্যান্য সদস্যরাও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে নতুন সরকার দায়িত্বভার নেওয়ার আগ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদিকে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি।

মোদির সামনে এখন যে চ্যালেঞ্জ: লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরে দুইজন নেতা এখন হয়ে উঠেছেন ‘কিংমেকার’।

গত ১০ বছর যখন সরকার চালিয়েছেন মোদি তখন ক্ষমতা পুরোটাই তার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতেই থেকেছে, অন্য কেউ ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলেন না। কিন্তু এখন জোট সরকার হলে সেখানে অন্যরাও অংশগ্রহণ করবে, তাদের কথাও শুনতে হবে, তবেই সরকার চলতে পারবে।

অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার যখন গঠিত হয় ১৯৯৯ সালে, তখন এনডিএ জোটে ২৪টি দল ছিল। সেই সরকার টিকেছিল পাঁচ বছর। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জোটের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ক্ষমতাই বাজপেয়ী সরকারকে পাঁচ বছর টিকিয়ে রেখেছিল।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: