এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় থেকে: অনেকটা শখের বসে দার্জিলিং ও চায়না মেন্ডারিণ জাতের কমলা বাগান করে লাভবান হয়েছেন জয়নাল আবেদীন। তার বাগানে প্রতিটি গাছে ঝুলছে বাহারী রংগের কমলা। বাগানটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে হাজার হাজার দর্শনার্থী।
জয়নাল আবেদীন টাঙ্গন ব্যারেজের পাশে তার গ্রামের বাড়িতে ২০১৯ সালে ৩ একর জমিতে কমলা ও মাল্টা বাগানটি করেন। হর্টিকালচার থেকে চারা ক্রয় করে জমিতে রোপন করেন। দুই বছরের মাথায় আশানুরুপ ফল পাওয়ায় বাগানের পরিধি আরও বাড়ান। এখন এই বাগানে প্রায় ৩শত কমলা গাছ রয়েছে। সে সাথে রয়েছে মাল্টা, লেবু, ড্রাগনের গাছ। পাশাপাশি সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থানের। অনেক বেকার যুবক বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
এবছর বাগানটিতে প্রচুর ফল ধরেছে। বাগানের প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলা। বাগানের প্রতিটি গাছে আট থেকে নয়শ কমলা ধরেছে। ভারতীয় জাতের এ ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে অনেক। নভেম্বর মাস থেকে বাগানের উৎপাদিত কমলা বিক্রি করতে শুরু করেছে বাগান মালিক।
উৎপাদিত বাগানের এসব ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বাগানেই কমলা বিক্রির ব্যবস্থা করেছে মালিক পক্ষ। দর্শনার্থীরা বাগান দেখতে এসে চাহিদা মতো কমলাও কিনতে পারছেন। উৎপাদিত কমলা ক্রয়ে বাগানেই ছুটে আসছেন দূর দূরান্তের ব্যবসায়ীরা। বাগান থেকেই প্রতি কেজি চায়না মেন্ডারিণ জাতের কমলা বিক্রি করছেন ১৮০-২০০ টাকা দরে। আর দার্জিলিং কমলা বিক্রি করছেন ৩০০ টাকায়।
বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে কমলার বাগান দেখতে এসেছি। আমি দার্জেলিং এ বাগান দেখেছি। কিন্তু এখানে কমলা বাগান যে সুন্দর তা দার্জেলিং এর বাগানকেও হার মানাবে। আর এই কমলা অনেক মিষ্টি। আমাদের দেশে দার্জিলিং ও চায়না মেন্ডারিণ জাতের কমলা উৎপাদন হচ্ছে ভাবতেই অবাক লাগেছে।
সাকোয়া ডিগ্রি কলেজর সহ.অধ্যাপক এন এ রবিউল হাসান লিটন বলেন, পরিবার সহ কমলা বাগান দেখতে এসেছি। আগে কমলা বাগান শুধু ছবিতেই দেখেছি। আজ বাস্তবে গাছে ঝুলন্ত কমলা দেখলাম। আর পুরো বাগানে কমলা ঝুলে রয়েছে। দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে। কমলা খেতে অনেক মিষ্টি ও রসালো। এই কমলা খেয়ে মনে হল না যে আমার দেশের মাটিতে উৎপাদিত কমলা খাচ্ছি। পরিবারের সকলে খুশি এমন কমলা বাগান দেখতে এসে।
বাগানের মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন, এই বাগান থেকেই এবার দশ হাজার মেট্রিকটন কমলা উৎপাদন হবে আশা করছি। এর আগে আমি ফল পাইকারি বিক্রয় করে দিতাম। এবার সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে বাগানটি ভাইরাল হয়েছে। সেজন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই বাগান দেখতে আসে। তবে কৃষকরা যদি এভাবে কমলার বাগান করতে এগিয়ে আসে তাহলে কৃষিতে একটা বিপ্লব ঘটবে। আর কমলা দেশের বাহির থেকে আমদানি করতে হবে না। আমাদের দেশের কমলা দিয়েই ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হবে বলে আমি মনে করছি। এছাড়াও আমার কাছে কেও বাগান সম্পর্কে জানতে আসলে আমি উৎসাহ ও পরামর্শ দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: পাইকগাছায় হলুদের সমারোহ; ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষা ক্ষেত
আপনার মতামত লিখুন :