খোলা চিঠি


নিউজ ডেক্স প্রকাশের সময় : মার্চ ২৯, ২০২৩, ৭:২১ পূর্বাহ্ন
খোলা চিঠি

বার বার আঘাত পেলে কি মানুষ সত্যিই ভীষণ নির্লজ্জ হয়ে যায় রে?

ভেবে বলতে হবে…

জলের বোতলটা একান্তিকার হাতে দিয়ে হাসিমুখে আসি বলে উঠে পড়ল ঈশান।

সাবধানে যাস, পৌঁছে জানাস।

বেশ কয়েক বছর পর কফি হাউসে দেখা হল একান্তিকা আর ঈশানের৷ ওরা দুজনই আগে একই অফিসে কাজ করত, যদিও তখন খুব বেশি কথা হত না ওদের। সম্প্রতি আবার ফেসবুকের সৌজন্যেই কথা শুরু হয়েছে, আর মাত্র কয়েক মাসেই ওরা বেশ ভালো বন্ধু হয়ে গেছে।

ঈশানের সাথে একান্তিকার যখন প্রথম দেখা হয়েছিল সেই সময় একান্তিকা ভীষণ সিরিয়াস ছিল, হাসি ঠাট্টার থেকে দশ হাত দূরে থাকত, আত্মসম্মান বোধ ছিল প্রচন্ড৷ ইদানিং কেমন যেন হয়ে গেছে ও, কেউ বার বার অপমান করলেও হাসে। আসলে ও এখন নিজেই নিজেকে অপমান করতে শিখে গেছে। তাই অন্য কারোর অবহেলা, আঘাত এসব নির্লজ্জের মতো হেসে উড়িয়ে দেয়। যেচে অপমানিত হয়েও নিজের উপর বিন্দুমাত্র রাগ হয় না। বরং নিজের মনকে বলে “আর কেউ তোর পাশে থাক না থাক, আমি সবসময় আছি।”

বাড়ি ফিরে ঈশানকে মেসেজ করল একান্তিকা … তুই তো আমায় উত্তরটা না দিয়েই চলে গেলি। এবার বল…

আমরা কাদের কাছে নির্লজ্জ হই জানিস? এক, যাদের খুব ভালোবাসি, আর দুই, যাদের খুব ঘৃনা করি। আশা করি তুই তোর উত্তরটা পেয়ে গেছিস।
আসলে কি জানিস তো আমাদের একটা ভুল হাজারটা ঠিকের পরেও বৃষ্টিতে ঝড়ে যাওয়া ফুলের কুঁড়ির মতো হয়। একটা কথা সবসময় মনে রাখবি – সময় সব উত্তর দেবে। বাকি তো কবিগুরু বলেইছেন “জীবনটাকে কেঁদে ভাসিয়ে দেওয়ার চেয়ে হেসে উড়িয়ে দেওয়াই ভালো ”। কি হবে এত কিছু ভেবে, একদিন সব ইগো, অভিমান, আঘাত, যন্ত্রণা সব কিছুকেই আমাদের বিদায় জানাতে হবে। তাই মনের কথাই শোন৷ কটা বাজে দেখেছিস? যা এবার শুয়ে পড়।

হুম বলে ফোনটা অফ করে শুয়ে পড়ল একান্তিকা।

স্বপ্নের মধ্যে হারিয়ে গেল অবাধ্য মনের সব যন্ত্রণাগুলো!


পূজা পালচৌধুরী
কবি, সাহিত্যিক, লেখক
আরোমা পার্ক, কলকাতা।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: