হ্যাপি নিউ ইয়ার


নিউজ ডেক্স প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১, ২০২৩, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
হ্যাপি নিউ ইয়ার

আর কয়েক ঘন্টা পরেই নতুন বছর, মানুষের মনে কত উন্মাদনা। পার্কস্ট্রিটের রাস্তাঘাট সেজে উঠেছে। দেশে বিদেশে সব জায়গাতেই সেলিব্রেশন পর্ব চলছে। চেনা সবকিছুই কেমন যেন পালটে ফেলছে নিজেদের চেহারা। চারিদিকে আলোকসজ্জা, খুশির মেজাজ। আবার কয়েকদিন পরে সবটা এলোমেলো হয়ে যাবে। রাস্তাঘাট অন্ধকার হয়ে যাবে, মানুষের কষ্টগুলো সামনে বেরিয়ে আসবে। সেলিব্রেশনের ছবির পরিবর্তে আবার স্টোরিতে থাকবে বিরহ বিচ্ছেদের সুর…

তিন বছর আগের এক 31ডিসেম্বরের ঘটনা… অফিস থেকে ফেরার সময় ফোনের দিকে তাকাতেই স্বাতী খেয়াল করল মায়ের 3 টে মিসড কল। ফোনটা সাইলেন্ট থাকায় ও বুঝতে পারেনি। সাথে সাথে মাকে ফোন করায় বুঝতে পারল মা এখনও ওকে সেই ছোট্ট স্বাতীই ভাবে। ঘড়ির কাটা 12 টায় পৌঁছানোর আগেই যাতে বাড়ি ফেরে সেটাই মায়ের বক্তব্য। কারণ নতুন বছর মেয়ের সাথেই সেলিব্রেট করতে চায় তার মা।

আজ স্বাতী একা। ওর জীবনে এমন কেউ নেই যার সাথে ও নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করবে।
পুরনো কথা ভাবতে ভাবতে অফিসের ক্যাবে করে বাড়ি ফিরছিল স্বাতী।

হঠাৎ রাস্তায় একটা লাল জামা পরা ফুটফুটে বাচ্চাকে দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল স্বাতীর।

বেশ কিছুদিন ধরেই স্বাতীর মন চাইছে ওর জীবনেও কেউ থাকুক। যার প্রতি ওর ভালোবাসাটা নিঃস্বার্থ হবে এবং যে ওকে সবসময় ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখবে। জীবনে একজনকে বিশ্বাস করেছিল স্বাতী। কিন্তু সেই বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ও আর কোন সম্পর্কে জড়াতে চায় না। তবে এবার ওর মন ওকে বারবার বলছে একটা ফুটফুটে কন্যাসন্তানকে দত্তক নিয়ে সারাজীবন তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখতে।

অনাথ আশ্রমে এসে সবথেকে ছোট্ট বাচ্চাটাকে দেখে স্বাতীর মনে পরে গেল ওর মায়ের কথা, ওর মা ওকে সবসময় বলতো, তুই যেমন আমাকে আগলে রাখিস, একদিন তোকেও কেউ এইভাবে আগলে রাখবে।

বাচ্চাটার হাতের আঙুলে হাত রেখে স্বাতী জিজ্ঞেস করল – ওর নাম কি? পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক দিদি বলল ‘লীনা’।
স্বাতী চোখ বন্ধ করে ভগবানকে বলল –
থ্যাঙ্ক ইউ ভগবান। আমার জীবনে আমার মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।


পূজা পালচৌধুরী
কবি, সাহিত্যিক, লেখক
আরোমা পার্ক, কলকাতা।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: