মামুনুর রশিদরা (প্রতীকী) যখন মঞ্চে তখন নারী অভিনেত্রী কে? যাকে একবাক্যে মানুষ চিনতো? সারা জাকের, ফেরদৌসি মজুমদার নাকি অন্য কেউ? তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা এই তো নাকি ভিন্ন কিছু?
সুবর্ণা মুস্তাফার আলোর পাশে আর কেউ দাঁড়াতে পেরেছে সে সময়? ছেলেদের ভেতরে আফজাল, ফরিদী, খালেদ খান আরও খুঁজলে পাওয়া যাবে কিন্তু নারীদের বেলায়?
আসুন এর পরের ধাপে দেখুন রুচি কি, কোথায়, কোন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে! জাহিদরা যখন কাজ করছে মাঠে তখন মামুনুর রশিদরা (প্রতীকী) নেতৃত্বে। একজন নারী অভিনেত্রীর কথা বলুন, আবুল হায়াত সাহেবের মেয়ে ছাড় অন্য আর কে আছে যার নামে নোংরা স্ক্যান্ডেল নাই মুখরোচক চটুলতা নাই
দর্শকের মাঝে এমন কি যারা মঞ্চের দর্শক নয় তাদের মাঝেও।
কেন এমন টা হয় জানেন? এমনটা হয় যারা তখন নাটক শিখতে আসত তাদের কোয়ালিটি না দেখে মামুনুর রশিদরা (প্রতীকী) তাদের শরীর দেখত। আর সেই নারী কর্মীর আর্থিক অবস্থান খারাপ হলে মানে হীরো আলম (প্রতীকী) হলে শুধু বাজাত না ঢোল বানায়ে ছাড়ত।
এই সময় খুব গুণী একটা মেয়ে মঞ্চে এসেছিল – তমালিকা কর্মকার। অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা তার কিন্তু ঐ-যে শেষ পর্যন্ত হালে পানি পায় নাই। কারন এই ঢোল বানানো ওয়ালারাই শেষ পর্যন্ত নাকে রুমাল চেপেছে, ছি বলেছে। বিদেশ পারি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে তাকে। বাবা ডেকেও কি ছাড়া পেয়েছিল কারো কাছ থেকে?
আসলে দ্বন্দ্ব টা কোথায়? আসল দ্বন্দ্ব টা মূলত শ্রেণী চরিত্রে। আসল টার্গেটটা হল টাকা বানানো, মদে চুর হয়ে থেকে ফুর্তি করা। হীরো আলম দের সংস্কৃতিকে রুদ্ধ করে নিজের হাতে সংস্কৃতির প্যাটেন্ট তুলে নেওয়া। গ্রাম বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতিকে রুদ্ধ করে দেওয়া। আর আর ফাঁকে ফুঁকে যদি কেউ বেরিয়ে পড়ে তবে তাকে টোপ গেলানো। যদি স্বভাব শিল্পী হয় তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার দুর্বল জায়গা খুঁজে বের করে স্তব্ধ করে দেওয়া। আমাদের সামনে ভুরি ভুরি এমন উদাহরণ আছে যাদের নিয়ে আমরা ট্রল করি । মমতাজ একজন। এই ট্রল যে আমরা আমাদেরই করি সেটিও আমরা বুঝিনা।
মমতাজ বলেছিলেন আমাদের প্রধান মন্ত্রী বিদ্যুতের যে ব্যবস্থা করেছেন তাতে বিদ্যুৎ ফেরি করে বেচতে হবে। একদম সত্য কথা বলেছেন মমতাজ। যে পরিমাণ ব্যয় এবং লুটপাট হয়েছে এক কুইক রেন্টাল খাতে সেই টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করলে নিশ্চয় বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলবার জায়গা খুঁজে পেত না মানুষ।
মমতাজকে ট্রল করে আমরা কুইক রেন্টালের লুটপাটকে আড়াল করি, লুটপাট পাচারকারিদের আমরা দীর্ঘায়ু দান করি। সঠিক চিত্র জনতার কাছ থেকে আড়াল করি, আমরা শহুরে মধ্যবিত্তরা। গ্রামের মানুষরা যে সরল হিসাব বুঝে আমরা শহুরে ধান্দালরা সেটা বুঝিনা, বলেই বিদ্যুৎ নিয়ে কানসাট তৈরি হয় প্রত্যন্ত অঞ্চলে। শহুরে ধান্দালরা, সত্য উচ্চারণ না করতে পারলে চুপ থাকুন।
দেশে নিশ্চয় রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে নতুবা এমনটা হতো না। প্রতিটা সেক্টরে একই রুচির দুর্ভিক্ষ। কারণ সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে। চামচামী দলবাজি ঘুষ দুর্নীতি লাগাম ছাড়া। তাইতো সময়ের বিবর্তনে আমাদের আল মাহমুদ পাঠ মূর্ত হয়ে উঠে –
“আমাদের সকল কলাকেন্দ্রে, আমাদের সর্ব কারুকাজে
অস্তিবাদী মামুনুর রশিদরা বাড়িয়েছে ব্যক্তিগত গলা”
– এসময়ের পাঠ
“আমাদের সকল কলাকেন্দ্রে, আমাদের সর্ব কারুকাজে
অস্তিবাদী জিরাফেরা বাড়িয়েছে ব্যক্তিগত গলা”
– আল মাহমুদ
আদীল এ হোসেন
আপনার মতামত লিখুন :