

“নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম একটি আইন পাস করা হয়েছে।”
– স্বাধীনতার ৫২ বছরের মাথায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। সূত্র বনিক বার্তা, ০৭.০১.২০২৩।
আপনারা যারা একে ওকে রাজাকার, পাকিস্তান বা ভারত-পন্থি বলেন, তারা কি বিষয়টা খেয়াল করেছেন আদৌ? যে দেশে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনই থাকে না, সে দেশে নির্বাচন হয় কি করে? তবে কি ৫১ বছর যাবত ক্ষমতায় থাকা প্রতিটি সরকার স্বেচ্ছাচারী ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছে? মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয়েছে স্বৈরাচারী কায়দায়? ক্ষমতায় থাকা প্রতিটি দল, প্রতিটি জোট, প্রতিটি সরকার জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে! আক্ষরিক অর্থে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হয়ে থেকেছে, শাসকের বাংলাদেশ? ৩০ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ মা-বনের সম্ভ্রম হারিয়ে যে স্বাধীন দেশ আমরা পেয়েছি সেই দেশের মানুষ, প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগ, সংসদ, স্থানীয় সরকার, আর্থিক খাত সবকিছুই স্বৈরাচারী কায়দায় বন্দি করে রেখেছে শাসকেরা, তাদের হাতের মুঠোয়। সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামো দিয়ে। তাই তো যারা রাজপথে জান জীবন দিয়েছিল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে সেই তারাই সকাল বিকাল সেই তাদের মুখেই ফেনা তোলে ‘সাংবিধানিক মেনেই নির্বাচন হবে’ বলে। যে দেশ ‘সংবিধান’ লিখবে বলে একটা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং একটি স্বাধীন দেশ উপহার দেয় জাতিকে সেই দেশে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা যায় সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে ! অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করতে পারে সেই দেশের সেনাবাহিনী! এই ক্ষমতা দখলের জন্য তাদের কোন জবাবদিহি করতে হয় না ! এই সেই মুক্তি যুদ্ধের বাংলাদেশ যে দেশে একবার ক্ষমতা বসলে আন্দোলন ছাড়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা যায় না।
আপনি কাহাকে দেশ বিরোধী রাজাকার বলিবেন?
বাংলাদেশের ক্ষমতায় যারা ৫১ বছর ধরে, তারা কি?
বাংলাদেশের ক্ষমতায় ১৪/১৫ বছর শাসন করেছে দুই স্বৈরাচার, বাঁকি ৩৭/৩৮ বছর শাসন করছে রহমান পরিবারের নেতৃত্বে থাকা দল, জোট।
সামরিক স্বৈরাচার এবং রহমান পরিবারের নেতৃত্বে থাকা ক্ষমতাসীন দল/জোট এর ভেতরে তফাৎ কোথায়?
স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার করব দিয়ে মৌলিক অধিকার হরণ করে, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে, যারা ক্ষমতায় বসে তারা কি রাজাকারের চেয়েও বড় রাজাকার নয়?
কথায় কথায় নিজেরদের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী দল বলে যারা নিজেদের দাবী করেন, তাদের চেয়ে কি বড় রাজাকার বাংলাদেশে অন্য কেউ আর আছে আদৌ?
মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে স্বাধীন বাংলাদেশে পরিণত করেছিল বাংলাদেশের আপামর জনগণ সেই জনগণই সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর সংস্কার করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতা তন্ত্রের কবর দিয়ে জবাবদিহি মূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত করবেই করবে। সে দূর বেশি দূর নয়।




































আপনার মতামত লিখুন :