বাজার থেকে করোনার সব টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা


অনলাইন ডেক্স প্রকাশের সময় : মে ৯, ২০২৪, ৫:০২ অপরাহ্ন
বাজার থেকে করোনার সব টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা

বিশ্ববাজার থেকে নিজেদের তৈরি সব কভিড টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এ টিকায় শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা এবং প্লাটিলেটের মাত্রা কমে যাওয়ার মতো বেশকিছু বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ ছিল। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃপক্ষ প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে অবশ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেয়। এখন চাহিদা কমার কথা জানিয়ে নিজেদের টিকা বাজার থেকে তুলে নেয়ার কথা বলছে ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল এবং বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠানটি।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ টিকা উৎপাদন হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে। আর ইউরোপে তৈরি একই টিকার নাম ছিল ‘ভ্যাক্সজেভরিয়া’। বিশ্বে প্রথম করোনার এ টিকাটি মানবদেহে প্রয়োগ করা হয় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। সপ্তাহ তিনেকের মাথায় বাংলাদেশেও পরীক্ষামূলকভাবে এর প্রয়োগ শুরু করে সরকার। এর ১০ দিন পরই গণপরিসরে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। দেশে মোট প্রয়োগকৃত ডোজের ১৫ শতাংশের বেশিই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করা হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে। এমন প্রেক্ষাপটে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, যেহেতু বিভিন্ন ধরনের কভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে, হালনাগাদ ভ্যাকসিনগুলো বাজারে উদ্বৃত্তও আছে। ফলে ভ্যাক্সজেভরিয়া ভ্যাকসিনের চাহিদা এখন কম। এগুলো আর তৈরি কিংবা সরবরাহও করা হচ্ছে না। মঙ্গলবার থেকে টিকা প্রত্যাহারের কথাও জানিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানিটি।

এদিকে ‘কোভিশিল্ড’ টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে কিনা তা জানতে জরিপ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গতকাল এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমাদের দেশে এ রকম কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার রিপোর্ট আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। তার পরও বাজার থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা তুলে নেয়ার বিষয়টি জানার পর ডিজি হেলথকে (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) নির্দেশ দিয়েছি এবং তারা এটা নিয়ে জরিপ করছে। যাদের এ টিকা দেয়া হয়েছে তাদের ওপর জরিপ করে আমাকে এ বিষয়ে রিপোর্ট দেবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে শুরু থেকে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনার আটটি টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে প্রথম থেকে চতুর্থ ডোজে ৩৬ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টিকা পেয়েছেন বিভিন্ন বয়সী ১৫ কোটির বেশি মানুষ। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ করে সরকার। সেই থেকে এ পর্যন্ত কোম্পানিটির ৫ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে, যা মোট প্রয়োগকৃত টিকার ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: