বাংলা গল্পে ‘মা’। ভালবাসার ঋতুতে প্রিয়জনের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার।


নিউজ ডেক্স প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২৩, ৭:৩৩ পূর্বাহ্ন
বাংলা গল্পে ‘মা’। ভালবাসার ঋতুতে প্রিয়জনের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার।

গুটিপোকা পোকা যেমন খোলস কেটে বের হয়ে আসে প্রজাপতি হয়ে আকাশে উড়বে বলে ঠিক তেমনই ৫/৬ দিন পর শীতকে বিদায় দিয়ে এসে যাবে বাঙালির ভালবাসার ঋতু বসন্ত। কোন একটি নির্দিষ্ট দিন নয়। পুর একটা ঋতু। দুই মাস। ৬০ দিন। বাঙালির ভালবাসার ঋতু।

বসন্তে কোকিলের মধুর স্বর আচ্ছন্ন করবে প্রকৃতি। গাছে গাছে ফুটবে ফুল গজাবে নতুন পাতা। কোকিল! কোকিল ডিম পাড়ে কিন্তু নিজে বাসা বাঁধতে জানে না। কোকিল ডিম পাড়ে কাকের বাসায়, বিনিময়ে কোকিল কাককে উপহার দেয় কাকের ডিম খেয়ে। কাক যত্ন সহ কোকিলের ডিমে তা দেয়, বাচ্চা ফুটায়। আহারের জোগান দিয়ে সেবা যত্ন করে বড় করে তোলে। দিন শেষে কাক যখন বুঝে যায় এ তার বাচ্চা নয়, কোকিলের বাচ্চা। তখন কাক কি করে? শুনেছি কাক ও কোকিলের সাথে বড় শত্রুতা। কাক কি তখন কোকিলের ডিমে তা দিয়ে লালন পালন করে যাদের বড় করে সেই কোকিলের ছানা তাদের কি শত্রু বিবেচনা করে? আচ্ছা কোকিলের মা কি কাক?
“ওপাড়ে মুখর হল কেকা ঐ
এ পাড়ে নীরব কেন কুহু হায়”

অমর একুশে বই মেলা ২০২৩ এ প্রকাশক: মধ্যমা মিডিয়া এন্ড পাবলিকেশন্স লিমিটেড নিয়ে এসেছে সাব্বির হাফেজ এর সম্পাদনায় একটি গল্প সঙ্কলন ‘বাংলা গল্পে মা’। পৌনে ছয় শত পৃষ্ঠার রয়েল সাইজ বই টির মুদ্রিত মূল্য – ১২৫০.০০ প্রচ্ছদ: অভীক বিক্রম ত্রিপুরা। পাবেন একুশে বইমেলা ২০২৩, স্টল নং- ৩২ । কোন সন্দেহ নাই বইটির বাঁধাই গেটআপ মেকআপ মেটার এবারের মেলায় শ্রেষ্ঠ বই এর দাবিদার।

নারী বহুরূপী। বেশ্যা, প্রেয়সী, ডাকিনী, যোগিনী, হাউজ ওয়াইফ।
‘মা’।
‘মা’ কেবলই নারী।
কোন পুরুষ সঙ্গী ছাড়া নারী গর্ভ ধারনে এবং মা হয়ে উঠতে সক্ষম – ধর্মগ্রন্থ সাক্ষী। ‘মা’ খুব খুব ছোট একটা শব্দ। ঠিক এতো ছোট শব্দ বাংলা ভাষায় খুবই কম আছে। সকল লিঙ্গের বর্ণের ধর্মের জাতের মানুষের সবটুকু এই ছোট শব্দটার ভেতরে লীন হয়ে যায় এক নিমিষেই। তাইতো ‘মা’ শব্দটা খুব ছোট হলেও পৃথিবীর তাবৎ সমুদ্র বা পাহাড় একসাথে করলে যে রূপ ধারণ করে বা করতে পারে তাও নিমিষেই হারিয়ে যায় ‘মা’ তে। নারী তার সকল পরিচয় ছাপিয়ে সকল সমুদ্র বা পাহাড় সমষ্টির চেয়েও বিশাল হয়ে ওঠে যখন সে ‘মা’।

মা/জননী, দাইমা, বায়োলজিক্যাল মা, পালিত মা, দুধ মা, কুমারী মা, ধর্ষিতা মা (ধর্ষণের কারনে মা) সহ যত প্রকারের মা হয় বা হতে পারে সকলই নারী। নারীর সব চেয়ে বড় পরিচয় ‘মা’। মা’কে ঘিরেই গড়ে ওঠে আমাদের জগত। কৃষি রাজনীতি শিল্প সাহিত্যে ব্যক্তির যে ভূমিকা সেও আসে মা এর কাছ থেকে। যখন সে গর্ভে তখন ‘মা’ এর চিন্তা চেতনা কল্পনা শিশুর উপর প্রভাব ফেলে শিশু মনন গড়ে উঠতে থাকে। জন্মানোর পর মা এর হাত ধরেই ব্যক্তির হাঁটতে শেখা, কথা বলতে শেখা, সহবত শেখা। হোক সে মা বস্তিবাসী, মধ্যবিত্ত বা প্রাসাদের মা। মা শিশুর পূর্ণ বীজতলা এবং আধা বীজ (মতান্তরে)। সে হিসাবে মা অনেক অনেক কদম এগিয়ে। ব্যক্তিকে নিয়েই সমাজ গড়ে ওঠে, সেই হিসাবে মা ব্যক্তির জন্মদাত্রী এবং সমাজ গঠনের ভিত্তি ভূমি। ভাষার বেলায় মানুষের ভাষা হয়ে ওঠে ‘মায়ের ভাষা’ – মানুষ প্রথম ভাষা শেখে মায়ের কাছে। ‘মা’ মানুষের প্রথম শিক্ষক এবং প্রশিক্ষক।

বাংলা সাহিত্যে মা কে বিষয়বস্তু করে গল্পের পরিমাণ কেমন?
“কৃষ্ণ চুড়া আর রক্ত পলাশের রঙ্গিন জাল বুনে
একুশে এস আজ শান্ত পায়ে পায়ে রঙিন ফাল্গুনে” – নাজিম মাহমুদ।

একুশ হয়ে ওঠে ‘অমর একুশ’; সেই ‘মা’ এর ভাষা ‘রাষ্ট্র ভাষা’র দাবীতে। মায়ের কাছ থেকে ভাষা শিখার পাঠ নেয় শিশু বলেই ভাষা – মায়ের ভাষা / মাতৃ ভাষা।

বাংলা সাহিত্যে ‘মা’ কে নিয়ে কত জন লেখক কতগুলি গল্প লিখেছেন? একটি সংকলনে কি মায়ে নিয়ে লিখা সকল গল্পের স্থান দেয়া সম্ভব? নিশ্চয় না। এমন ভাবনারও কোনই কারন বা যৌক্তিকতা নাই।

মা/জননী, দাইমা, বায়োলজিক্যাল মা, পালিত মা, দুধ মা, যত প্রকারের মা হয় বা হতে পারে তাদের মধ্যে আসলে ‘মা’ কে? কোন সীমারেখায় ‘মা’ কে বেঁধে ফেলা যায় আটকে ফেলা যায় ‘মা’ কে? এই বিতর্ক চলমান আমাদের সমাজে – আধুনিকতায় এসে আমাদের মা বাবা কেবলই ওল্ড এবং তাদের আশ্রয় ওল্ড-হোম। বোধ করি আমাদের মননে ‘মা’ ঠিক মূর্ত হয়ে ওঠে না বলেই আমাদের বৃদ্ধ নিবাসের সংখ্যা বাড়ে নতুবা এটি নিশ্চিত কমে এসে দাঁড়াত শূন্যের কোঠায়।

ভাল বীজে ভাল চারা – এমন ধারনা আমাদের বদ্ধমূল। সুন্দরের প্রতি অনির্বাণ আকর্ষণ মানুষের, আচ্ছা সুন্দর কি? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুন্দরের খুব চমৎকার এবং লাগসই সংজ্ঞা বা বর্ণনা দিয়েছেন। আমার মত কম জানা বোঝা দেখা মানুষের কাছে এর চেয়ে ভাল মনে ধরা সংজ্ঞা আর নাই – “আমি চেয়ে দেখলুম পুবে পশ্চিমে জ্বলে উঠল আলো / গোলাপ কে বললুম সুন্দর সুন্দর হল সে।” আমি যাকে বলব সুন্দর সেইই সুন্দর এর উপর কোন কথা নাই।
“তাঁর জনহীন জন্মদ্বার সে সম্পূর্ণ খোলা রেখেছে” (জননী, হাসান আজিজুল হক)। জন্মদ্বার খোলা রাখলেই সে জননী!
নিজে গর্ভ ধারণ করলেই সে মা?
অথবা কারো সন্তান চুরি করে সেই সন্তানকে পুঙ্গ করে ভিক্ষা বৃত্তির হাত থেকে বাঁচাতে যখন একজন ভিখারিনী সেই চুরি করা সন্তানকে বুকে আঁকড়ে ভিখারির কাছে থেকে ছুটে পালিয়ে যায় তখন কি সে মা হয়ে ওঠে (মা, সরদার জয়েন উদ্দীন)?

আসলে মা কে?

উপনিবেশিক শিক্ষায় বড় অফিসার মানেই সাহেব। অখণ্ড ভারতে উপনিবেশ স্থাপনের আগে কি চাকুরী প্রথা ছিলা না? নারী কাউকে খাবার দিলে বা মুখে তুলে খাওয়ালেই কি মা হয়?
সাহেবের মা, অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত এর গল্প এমনই প্রশ্নের উদ্রেক করে মনের গহিনে।

সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা তৈরি অনেক গল্প ভেসে বেড়ায় রূপকথার মত। কোন এক আলোচনায় / আড্ডায় শুনেছিলাম সত্যজিৎ একটার পর একটা শর্ট নিচ্ছেন। তার কোন শর্টই পছন্দ হচ্ছে না বা মনে ধরছে না। সর্টটির বিষয়টা খুবই ছোট, নগণ্য, সামান্য – মা এর ভূমিকায় অভিনয় করা নারীটি একটি শিশুকে ভাত খাওয়াচ্ছেন, মুখে তুলে। শিশুটি অভিনেত্রীর সন্তানের ভূমিকায়। কিন্তু কোন অবস্থাতেই এই শর্ট মন পুত হচ্ছে না সত্যজিৎ রায়ের। কোথাও কিছু একটা খামতি আছে ঘাটতি আছে। কি সেই খামতি বা ঘাটতি সেটা তিনিও ধরতে পারছেন না, তাই একের পর এক শর্ট নিচ্ছেন এবং বাতিল করছেন – লম্বা সময় ধরে এই একই কাজ করতে করতে অবশেষে যে শর্টটি ওকে হল সেই শর্টে অভিনেত্রী শিশুটির মুখে খাবার তুলে দিবার সময় নিজেই নিজের অজান্তে তার মুখ হালকা করে হা করেছিলেন, যেন শিশুটিকে কেবল তিনি খাওয়াচ্ছেন না; তার মমত্ববোধ এমনই প্রকাশ পেল যে শিশুকে খাওয়ানোই ‘মা’ এর নিজের খাওয়া!? শিশুকে মুখে তুলে খাওয়ানোর সময় নারী হালকা করে নিজের মুখ খুললেই কি মা হয়?

‘মা’ এর আসন্ন মৃত্যুকে স্মরণ করে যখন কোন বোন তার ১৪/১৫ বছরের ছোট শিশু ভাইকে বুকে আঁকড়ে ধরে তার প্রেমিক কে ছুঁড়ে ফেলে তখন সেই বড় বোনই মা হয়ে ওঠে (মাতৃকা, সমরেশ মজুমদার)?

নাকি বিয়ে না করে যে নারী সন্তানের জন্ম দেয় সেই তথাকথিত অবৈধ মা সমাজ সংসার এবং সংস্কারের হাত থেকে বাঁচতে তার সন্তানকে দত্তক দেয়ার হাত থেকে বাঁচতে সন্তানকে বুকে আঁকড়ে নিরুদ্দেশের পানে ট্রেনে ছুটে চলে সেই নারী ‘মা’ নয় (মা-জননী, সৈয়দ মুজতবা আলী)?

মা-জননী, সৈয়দ মুজতবা আলী পড়া শেষে নিজেই নিজের সামনে দাঁড়িয়ে পরি, পরতে হয়। ‘সিঙ্গেল মাদার’ বাংলায় এর প্রতিশব্দ কি? আছে কোন প্রতিশব্দ? বিদেশি ভাষা থেকে শব্দ নিয়ে ভাষা সমৃদ্ধ হয়। না থাক ‘সিঙ্গেল মাদার’ এর প্রতিশব্দ বাংলা ভাষায়। ‘সিঙ্গেল মাদার’ নিজেই বাংলা ভাষায় জায়গা নিক জল পানি ঢেঁকি বা চেয়ারের মত আসন পেতে; তাহাতে বাংলা ভাষার কোন হেলদোল হবে না কিন্তু কে সেই ‘সিঙ্গেল মাদার’? কাহাকে বলব ‘সিঙ্গেল মাদার’? সাধারণত ‘সিঙ্গেল মাদার’ বলতে আমারা তালাক প্রাপ্ত সেই নারীকেই বুঝি যার সাথে ডিভোর্স এর পর সন্তান থাকে। যে মার সন্তান ছিল কিন্তু ডিভোর্স হবার পর সন্তানের উত্তরাধিকার পায় নাই তাকে আমরা কি বলিব? স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ধর্ষিতার সন্তান যুদ্ধ শিশু যারা কিনা ‘মুক্তিযুদ্ধে’র ফসল; তাদের হবার কথা ছিল বাংলাদেশের সব চেয়ে সম্মানিত নাগরিক, তারা দেশের মাটিতে ‘যুদ্ধ শিশু’ হিসাবে বেড়ে উঠতে পারে নাই। উপরন্তু তারা বাংলাদেশ থেকে এমন ভাবেই নির্বাসিত হয়েছিল যে তারা দাবীও করতে পারে না তারা বাংলাদেশের মানুষ, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের অধিবাসী।

স্বাধীনতার ৫১/৫২ বছর পর কি বাংলাদেশ নির্ধারণ করতে পেরেছে কে কুমারী মা? ধরে নেয়া গেল কোন কোন অবিবাহিতা নারী একজন পুরুষের সাথে বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কারনে মা হলেন, তিনি ‘কুমারী মাতা’। কিন্তু বিষয়টা যদি এমন হয় বয়ঃসন্ধি উত্তরণের সময়ে কোন বালিকা তার সহজাত প্রবৃত্তির কারনে তার একাধিক খেলার সাথীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ফলে মা হলেন এবং চিহ্নিত করতে পারলেন না আসলে কোন ছেলেটি তার বাবা তবে তিনিও কি কুমারী মাতা? এই মা এর সামাজিক পরিচিতি বা কি? বাংলাদেশেও এমন ঘটনা কিন্তু বিরল নয়। বাংলাদেশে রাষ্ট্র ব্যবস্থা কি নির্ধারণ করেছে – আসলে মা কে এবং কোন মা কে কোন নামে চিহ্নিত করা হবে আর কেই বা হবেন প্রকৃত মা?

১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান। দেশ পরিচালনার পদ্ধতি নির্ধারণ / সংবিধান বানানোর দাবীতে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হল মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১। কেবল মাত্র একটি সংবিধান লিখবে বলে এবং সেই সংবিধান মেনে দেশ পরিচালিত হবে বলেই ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীন বাংলাদেশ ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত পরিচালিত হল স্বাধীন বাংলা সরকার দিয়ে, যদিও ১৯৭২ এর ৪ঠা নভেম্বর একটি সংবিধান রচিত হল কিন্তু দেশ পরিচালিত হল না সংবিধান মেনে। ১৬ই আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত দেশ সামরিক স্বৈরাচারের দখলে। এখনও দেশ পরিচালিত হচ্ছে সংবিধানের দোহাই দিয়ে স্বেচ্ছাচারী ভাবে। ঠিক একই ভাবে আমরা আমাদের ‘মা’ কে কি রেখে দিচ্ছি জোড়াতালি দিয়ে নিজের মননে নিজের বুঝকে প্রাধান্য দিয়ে? আমি বললে ‘মা’ আর না বললে নয়? ঠিক যেমন আমি যাকে সুন্দর বলি সেইই সুন্দর তেমনই করে? দেশকে আনরা মাতার সাথে তুলনা করি। মা কে নিয়ে আলাপে ‘দেশ মাতৃকার’ এর আলাপ কি ধান ভানতে শীবের গীত?

সুন্দর এর বেলায় মালিকানার প্রশ্ন যুক্ত নয় কিন্তু ‘মা’ এর বেলায় বিষয়টা ঠিক ততোটাই উল্টা – এখনও সন্তানের মালিকানার দাবীতে আদালতে লড়ে চলেছে লক্ষ লক্ষ মা। পিতৃ পরিচয় বিহনে সন্তান হচ্ছে কলঙ্কিত। যে যুদ্ধ শিশুর হবার কথা ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে গর্বিত নাগরিক তারা পরিচিত হচ্ছে সমাজে জারজ বা বাস্টার্ড হিসাবে। যুদ্ধ জয়ের সাথে সাথে হচ্ছে নির্বাসিত নিজ দেশ থেকে!

অতি সম্প্রতি শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে শিশুর অভিভাবক হিসাবে ‘মা’ এর নামই যথেষ্ট বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। খুব ভাল খবর। এই খোবরটি সন্তানের মালিকানার প্রশ্নে ‘মা’ এর অধিকার যেমন প্রতিষ্ঠিত করে ঠিক তেমনই ‘মা’ পরিচয়টিকে জটিলও করে তোলে বৈকি। প্রত্যাশা করি সকল ধর্মের বর্ণের সন্তান তার পিতা মাতার সম্পত্তিতে সমান অংশীদার হউক। নারীর নিজস্ব পরিচয় তৈরি হউক। কারো মেয়ে, কারো বউ, কারো বোন, কারো মা এর পরিচয় মুছে গিয়ে নারী নিজেই নিজের পরিচয় নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক সমাজে। মা বাঁচুক মাথা উঁচু করে শিরদাঁড়া শক্ত করে।

‘বাংলা গল্পে মা’ কেবল মাত্র ‘মা’ কে কেন্দ্র করে ৫৮ লেখকের লিখা গল্প সংকলন নয় বরং অমর একুশে গ্রন্থ মেলা ২০২৩ শ্রেষ্ঠ বই। একই সাথে ‘মা’ বিষয় টি নিয়ে পাঠকের মনে লাখো জিজ্ঞাসার জন্ম দিবার, বিভিন্ন উৎসবে প্রিয়জনদের উপহার দিবার মত একটি বই। আগামীর রাষ্ট্র ব্যবস্থা মালিকানার প্রশ্নে মা/জননী, দাইমা, বায়োলজিক্যাল মা, পালিত মা, দুধ মা, কুমারী মা, ধর্ষিতা মা (ধর্ষণের কারনে মা) সহ যত প্রকারের মা হয় বা হতে পারে সকলেরই সংজ্ঞা নিরূপণে সচেষ্ট হবে এবং তাদে অধিকার নিশ্চিত করবে। সে দিন খুব বেশি দূরে নয়।

কোন সন্দেহ ছাড়াই বলা যায় সংকলনটি পাঠে আরও আরও মূর্ত হয়ে উঠবে ‘মা’ পাঠকের কাছে। গল্প সংকলনটির পাঠ আমাদেরকে সাহায্য করবে ‘মা’ কে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করে সকল অবস্থায় তাঁর কেয়ার নিতে।


আদীল
ঢাকা।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: