প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। আইন মন্ত্রণালয়ে গতকাল তারা এ পদত্যাগপত্র জমা দেন। নিয়ম অনুযায়ী আইন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্রগুলো প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
পদত্যাগ করা আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি হলেন এম ইনায়েতুর রহিম, মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. শাহিনুর ইসলাম ও কাশেফা হোসেন। আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করেন। এরপর একে একে পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট বিল্ডিং ও রেকর্ডগুলো রক্ষা করা, বিচারপতিদের শারীরিক হেনস্তা থেকে রক্ষা করা, তাদের বাড়িঘর রক্ষা করা, কোর্ট প্রাঙ্গণ রক্ষা ও জাজেজ টাওয়ার রক্ষার স্বার্থে আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে গতকাল সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিদের পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হন। সে সময় তারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এ ঘোষণা আসার পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান।
ওবায়দুল হাসান ২৪তম প্রধান বিচারপতি। তিনি একসময় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রণীত ‘অনুসন্ধান কমিটি, ২০২২’-এর সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ওবায়দুল হাসান প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে আসেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে। ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ পদে থাকার কথা ছিল তার। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের যে দাবি উঠেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদপূর্তির প্রায় দেড় বছর আগেই পদত্যাগ করতে হলো তাকে।
আপনার মতামত লিখুন :