সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের জন্য কেনাকাটার নামে ১৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন পণ্য কেনার কথা বলে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংশ্নিষ্টরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এসবের তথ্য প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে। দুদক সূত্র জানায়, কমিশনের অনুমোদনক্রমে শিগগির অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর নামে সিরাজগঞ্জে এই মেডিকেল কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) আওতায় ২৪২ কোটি ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ১৩টি প্যাকেজে মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে (ওটিএম) কেনার জন্য আদেশ দিয়েছিল।
প্রকল্প পরিচালক ডা: কৃষ্ণ কুমার পাল মন্ত্রণালয়, ক্রয় সংক্রান্ত আইন (পিপিএ) ২০০৬ ও ক্রয় সংক্রান্ত বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ লঙ্ঘন করে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের প্রস্তাবিত মূল্যেই কার্যাদেশ দেন।
হংকংয়ের ফারভেন্ট কোম্পানির অনুকূলে কার্যাদেশে ২৬টি এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়। পরে ওইসব এলসির বিপরীতে ১৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ওই কোম্পানির হংকংয়ের ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়। তবে যেসব পণ্যের ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছিল তা আর গ্রহণ করা হয়নি।
দুদক সূত্র জানায়, ফারভেন্টের স্থানীয় সরবরাহকারী ছিল বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোম্পানি। তবে বেঙ্গল সায়েন্টিফিক ও হংকংয়ের ফারভেন্ট কোম্পানির মালিক একই ব্যক্তি। তার নাম জাহের উদ্দিন সরকার। তিনি একজন ঠিকাদার।
দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, প্রকল্প পরিচালক ও ঠিকাদার পরস্পর যোগসাজশে মন্ত্রণালয়ের আদেশ লঙ্ঘন করে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কার্যাদেশ দেখিয়ে ১৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা হংকংয়ে পাচার করে আত্মসাৎ করেছেন।
শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে কেনাকাটার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি অনুসন্ধান করেছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো: শাহজাহান মিরাজ। অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে।
2021-01-30 06:29:31
আপনার মতামত লিখুন :