সমাজ, অভিবাবক কেউ কিছু বলছে না


নিউজ ডেক্স প্রকাশের সময় : মে ২৫, ২০২২, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন
সমাজ, অভিবাবক কেউ কিছু বলছে না

“ঢাবির হলের ড্রেনে ফেলে পেটানো হলো ছাত্রদলের দুজনকে”
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হকিস্টিক, রড, চাপাতি নিয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা”
“ঢাবিতে হামলার পর এবার ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া”
“ছাত্রলীগকে ইশরাকের হুঙ্কার”

এইগুলো হলো আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নিয়ে জাতীয় দৈনিকে সংবাদ শিরোনাম। এইগুলো কি কখনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ঘটনা হতে পারে? ছাত্র হয়ে ছাত্রের উপরে পৈশাচিক মনোভাব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। ব্যক্তিগতভাবে দুই পক্ষের কারো বিরুদ্ধে হয়ত কারো ক্ষোভ নেই। কেউ কাউকে হয়ত চিনেও না। রাজনীতি না থাকলে এরাই একে অন্যের বন্ধু হতো। এরা যেই দল করে সেই দলের আদর্শের কথাও হয়ত অনেকেই জানেনা। এরা কেবলই জাতীয় রাজনীতির বলি হয়ে নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে একে অন্যকে পারলে মেরে ফেলছে। কি পরিমান বিষ ছাত্রদের বাবা-মা বয়সী বুইড়া রাজনীতিবিদরা এদের মনের মধ্যে ঢেলে দিয়েছে বুঝতে পারছেন?

এই ছাত্ররা কারো না কারো সন্তান, কারো না কারো বন্ধু। এদের প্রত্যেকের আপনজন আছে। আপনজনেরা এই ছেলেমেয়েদের দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পাঠিয়েছে জ্ঞানার্জন করে দেশ এবং পরিবারের সুনাগরিক হওয়ার জন্য। এইভাবে আগেকার রাজা বাদশারা যেমন দেশ দখলের জন্য প্রতিবেশী দেশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তো এটাও অনেকটা তাই।

সেই ৩০০/৫০০/১০০০ বছরের ঐতিহ্য এখন বেঁচে আছে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সেই এলাকার গ্রামবাসীদের সাথে মারামারিতে লিপ্ত হয়, দেখা যায় সেই এলাকার দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সাথে মারামারিতে লিপ্ত হয়।

ছাত্রছাত্রীদের এইভাবে শত্রুভাবাপন্ন বানালো কারা? কাদের স্বার্থে তারা ছাত্র হয়ে ছাত্রদের পিটায়। তারাই হলো আসলো ক্রিমিনাল এবং দেশদ্রোহী। এই ছাত্রদের কত পোটেনশিয়াল। বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় কত যুদ্ধ করে?

১২ বছর নিরবিচ্ছন্ন পড়ালেখা করে ভর্তি যুদ্ধে যোগ্যতা প্রমান করে বিশ্ববদিয়ালয়ে ভর্তি হয়। পোটেনশিয়াললি এরা রাষ্ট্রের বিরাট সম্পদ। ভর্তি হওয়ার পর ৪-৫ বছর আমাদের সেথা নিয়মিত সুন্দরভাবে থাকলে এরা সবাই একেকজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হতো। ছাত্র জীবনটা কত সুন্দর হতে পারতো। সেই জায়গায় আমাদের বুইড়া রাজনীতিবিদরা এদেরকে অবৈতনিক সৈনিক বানিয়ে এদের হীন স্বার্থে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করছে না। ওই বুইড়াদের কেউ ভর্ৎসনা করছে না।

কামরুল হাসান মামুন
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: