ছাত্রজনতার ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পর মুক্তি পেয়ে এক ভিডিও বার্তায় প্রতিশোধের রাজনীতি পরিহারের বার্তা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
খালেদার এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। একইসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে অতীতে যা হয়েছে তা ভুলে যেতে বলেছেন তিনি।
বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন জয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিষ্ঠুর বল প্রয়োগ এবং দমন পীড়নের পর তা রূপ নেয় সরকার পতনের দাবিতে। শেষ পর্যন্ত গণআন্দোলনের মুখে আর টিকতে পারেনি আওয়ামী লীগ সরকার।
শনিবার রয়টার্সকে জয় বলেন, ‘খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে অতীতকে না টানার কথা বলেছেন। এটা শুনে আমি খুব খুশি হয়েছি। আসুন, আমরা অতীতকে ভুলে যাই। প্রতিশোধের রাজনীতি পরিহার করি। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছি—তা (জাতীয়) ঐক্য সরকার হোক, বা অন্য কিছু হোক।’
বৃহস্পতিবার নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে বাংলাদেশে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন চান জয়।
তিনি বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার মতো আমাদের শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র রয়েছে।’
গত ১৫ বছরের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল দমনে বরাবরই বিশ্বমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হন শেখ হাসিনা। প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির সঙ্গে সংলাপ কিংবা আলোচনা বরাবরই উড়িয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে নেওয়ায় নির্বাচনে আস্থার সংকট জানিয়ে এসেছে বিরোধীজোটগুলো। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি আওয়ামী লীগ। সমালোচকরা তার শাসনকে স্বৈরতন্ত্রের সাথেও তুলনা করেন।
কিন্তু সরকার পতনের পর উল্টো সুর জয়ের কণ্ঠে। তিনি এখন চান, বিএনপির সঙ্গে আলোচনা এবং সমাঝোতার পথ।
জয় আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি ও সমঝোতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তর্ক করতে পারি। আমরা কোনো বিষয়ে অসম্মত হওয়ার বিষয়ে একমত হতে পারি। আমরা সব সময় সমঝোতার পথ খুঁজতে পারি।’
নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জয়ের ভাষ্য, ‘এই মেয়াদের পর আমার মা যেভাবেই হোক অবসর নিতে চেয়েছিলেন। দল যদি আমাকে চায়, হয়তো রাজি হব। বিষয়টি আমি নিশ্চিতভাবে বিবেচনা করব।’
অপর এক বক্তব্যে জয় আরও বলেছিলেন, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের পরিবারকে বার বার অপমান করেছে। সুতরাং এখন আমরা, বিশেষ করে আমার মা আর রাজনীতি করবেন না। কিন্তু এমন বক্তব্যের পর দিনই বিপরীত কথা বলেন তিনি। বলেন, আওয়ামী হারিয়ে যাওয়ার দল না, আবার ঘুরে দাঁড়াবে। এমনকি নেতাকর্মীদের শান্ত থেকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুতি নিতেও বলেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :