বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে, বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গণগ্রেফতার: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ


অনলাইন ডেক্স প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৭, ২০২৩, ৪:৫০ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে, বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গণগ্রেফতার: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

বাংলাদেশে আগামী বছরের ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে কর্তৃপক্ষ বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তু করছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এ অবস্থায় অবাধ নির্বাচন অসম্ভব বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এইচআরডব্লিউ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যখন সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলা টিপে ধরে এবং খেয়ালখুশি অনুযায়ী গ্রেফতার, জোরপূর্বক গুম, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিকভাবে বিরোধী দল, সমালোচক এবং অধিকারকর্মীদের অক্ষম করে দেয়, তখন একটি অবাধ নির্বাচন অসম্ভব।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সহিংসতা ও সমালোচকদের জেলে পাঠানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত অবিলম্বে রাজনৈতিক গ্রেফতার বন্ধের আহ্বান জানানো। একই সঙ্গে এটা পরিষ্কার করতে হবে যে, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সহ্য করা হবে না।

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে অবিলম্বে রাজনৈতিক এবং বেআইনি গ্রেফতার বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলীয় নেতা ও সমর্থকদের টার্গেট করছে কর্তৃপক্ষ। একদিকে যখন বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দিয়ে জেলখানা ভরে ফেলছে কর্তৃপক্ষ, তখন সরকার কূটনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

সংস্থাটি লিখেছে, গত ২৮ অক্টোবর প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসমাবেশের পর থেকে বিরোধী দলের কমপক্ষে ১০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সহিংসতায় দুই পুলিশ সদস্যসহ নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ হাজার ৫০০ মানুষ। ১৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার, ভিডিও ও পুলিশি রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে যে, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, খেয়ালখুশি মতো গণগ্রেফতার, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। সম্প্রতি নির্বাচন সংক্রান্ত সহিংসতায় তা বেড়ে গেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরও লিখেছে, বিরোধী দলকে মুছে দেওয়ার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে মুছে দিতে চায়।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, বিদেশি সরকারগুলোর বলা উচিত যে, মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা আছে সরকারের। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ‘এভরিথিং বাট আর্মস’ বাণিজ্য কর্মসূচির প্রধান সুবিধাভোগী বাংলাদেশ। এছাড়া জিএসপি সুবিধা প্রয়োগের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার। এটা করা হলে গার্মেন্টসসহ গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিতে শুল্ক কমিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘনের ফলে এসব কর্মসূচিতে সরকারের বৈধতা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এর সঙ্গে যুক্ত সুনির্দিষ্ট মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার। সম্প্রতি এ দেশ সফরে এসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কর্মকর্তারা ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট এসব নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেছেন।

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: