যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে পাকিস্তানে চীনের গভীর কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে, যে কারণে বহু ঝক্কি-ঝামেলার পরও দুই দেশ একসঙ্গে থাকছে।
কংগ্রেসে পাঠানো মিলিটারি অ্যান্ড সিকিউরিটি ডেভলপমেন্টস ইন চায়না’ শীর্ষক রিপোর্টে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পরামর্শ দেয় যে পাকিস্তান হাতেগোনা কয়েকটি দেশের একটি যেখানে চীন দিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় দুরকম এনগেজমেন্টই জোরদার করতে চায়।
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে প্রকাশিত এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে পাকিস্তান হলো এমন একটি দেশ যেখানে চীন মিলিটারি লজিস্টিকস ফ্যাসিলিটি তৈরির জায়গা তালাশ করতে পারে। তবে বেইজিং ও ইসলামাবাদ দুই তরফেই এমন সন্দেহ বাতিল করে দেয়া হয়।
পেন্টাগন উল্লেখ করে, পাকিস্তান ওইসব দেশের মধ্যে রয়েছে যেখানে বেইজিং তার কৌশলগত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সামরিক তৎপরতা চালানোর মতো বহু সংখ্যক ‘ক্যাম্পেইনের’ উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
এই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে, চীন চাচ্ছে রাশিয়া, পাকিস্তান ও আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় এনগেজমেন্ট জোরদার করতে। ফলে বিদেশী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কম্বাইন্ড অপারেশন আয়োজন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে চীনের সামর্থ্য বাড়াবে।
চীনের স্ট্রাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স (এসএসএফ) নামিবিয়া, পাকিস্তান ও আর্জেন্টিনায় ট্রাকিং, টেলিমেট্রি ও কমান্ড স্টেশন পরিচালনা করছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
পেন্টাগন উল্লেখ করে যে, পাকিস্তানে চীনের ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড (ওবিওআর) প্রকল্পগুলোর মধ্যে পাইপলাইন ও বন্দর নির্মাণের বিষয় রয়েছে, যার লক্ষ্য মালক্কা স্ট্রেইট পথে চীনের জ্বালানি পরিবহন নির্ভরতা কমিয়ে আনা।
২০১৯ সালে চীনের সামরিক বাহিনী পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার জাতীয় পর্যায়ের মহড়া সেন্টার-১৯-এ অংশ নেয়।
কংগ্রেসকে পেন্টাগন জানায়, তাজিকিস্তান ও চীনের মধ্যে সন্ত্রাস বিরোধী সহযোগিতার সঙ্গে ২০১৬ সালে গঠিত আফগানিস্তান, চীন, পাকিস্তান ও তাজিকিস্তানের মধ্যে চতুর্পক্ষীয় সহযোগিতা ম্যাকানিজমের সংযোগ থাকতে পারে। এই ব্যবস্থার আওতায়, চার দেশের সবাই চীনের তিন দুষ্ট সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও ধর্মীয় চরমপন্থার বিরুদ্ধে যৌথভাবে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে রাজি হয়।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয় যে পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দর উন্নয়নে চীনের বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ থাকলেও সেখানে কোন সামরিক স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে এমন আভাস পাওয়া যায়নি।
পেন্টাগন রিপোর্টের মতে ফর্বস রিপোর্টের লেখক এইচ আই সুট্টন যুক্তি দেন যে, বেইজিংয়ের কাছে গোয়দারের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এই বন্দর বেইজিংকে সড়ক ও রেল সংযোগের মাধ্যমে এমন সুবিধা দেবে যাতে মালাক্কা প্রণালী এড়িয়ে যেতে পারবে তারা।
2021-05-04 18:24:24
আপনার মতামত লিখুন :