দেশ তো একটা গাছের মত


নিউজ ডেক্স প্রকাশের সময় : মে ২৪, ২০২২, ১১:৪১ অপরাহ্ন
দেশ তো একটা গাছের মত

তর্ক বিতর্কের ঘেরা টোপে পড়ে মাটির অন্ধকার থেকে শেকড় চিৎকার করল আমিই সুন্দর। দেখনা আমি কেমন শোভা বর্ধন করি ধনিদের বসবার ঘড়ে। চা গাছের শিকড় হয়েও শোভা পাই, আমার উপর কোন কাথ নয় রাখা হয় কাঁচের টুকর আমার সৌন্দর্য দেখবে বলে। বড় বড় গাছে শিকড় আরও আরও অনেক অনেক সুন্দর শিল্পির তুলিতে আঁচড় কাটার মত। আমার গুন সে না হয় বাদ দিলাম। আমিই শ্রেষ্ঠ সে আর বলতে!

শাখা প্রশাখা বলে আমি পাতা ধারন করি, আমাতেই শোভা পায় ফুল, ফল। মানুষ ফুল দেখে মুগ্ধ হয়; ফল খেয়ে খুধা মেটায়। সুতরাং আমিই সুন্দর। আমি ছাড়া শেকড় তোমার সুন্দর হবার কোন স্থান নাই। আমিই জরুরী আমিই প্রথম আমার জন্যই মানুষ গাছ লাগায়।

ফল বলে নিজের ঢোল নিজে নাই বা পিটালাম। শাখা প্রশাখা তুমি নিজেই বলেছ, আমার গূণ কেত্তন। আমিই আসলে সব হা তোমার ফুলের গুন কেত্তন আমার ভালো লেগেছে কিন্তু সে তো ঐ পর্যন্ত, মানুষ অপেক্ষা করে আমার জন্য আমাকেই তাঁরা চায় আর কিচ্ছু নয়। অপেক্ষা করে আমার ফুটবার।

ফুল বলে আরে অকৃতজ্ঞ ফল তুই ঠিক মানুষের মত। তুই ভুলে গেলি আমি না জন্মালে, আমার সাথে ভরমর খেলা না করলে তোঁর কোন অস্তিত্ব নাই। তুই থাকতি না আমি ছিলাম বলেই না তুই আছিস তোকে চোখে দেখে মানুষ।

সবার এমন কথা শুনে কাণ্ড বলে তোমরা যে যা বলেছ সকলই সত্য। তবে তোমরা আমার কথা ভুলে গেলে কি করে সেটাই আমার ভাবনার বিষয়। ফুল তুমি সত্য বলেছ। হা তোমরা সবায় মানুষের মত আমার কথা তোমরা ভুলে গেলে। এই আমি যদি না থাকতাম তবে শেকড়ের অন্ধকারের মেহনত তোমরা পেতে না। আর তোমরা না থাকলে আমিও একটি গাছে পরিনত হতে পারতাম না তোমাদের সবাইকার একটা নিদ্রিস্ট গুন আছে, থাকে থাকবার কথাও বটে। ফল, ফুল, শাখা-প্রশাখা, কাণ্ড, মুল এই মিলিয়েই না একটি গাছ, একটি বৃক্ষ। সত্যিই তোমরা মানুষের মত হিংসুক, স্বার্থপর কেবল নিজের প্রতি দেখ, নিজের মত চল। সামগ্রীকতা তোমাদের মাথায় থাকেনা।

একটি দেশে মানুষ যেমন প্রয়োজন ঠিক তেমনি মানুষ থাকলে মত থাকবে মতভেদ থাকবে কারও মত খারাপ বা ভালো সেটা নিয়ে কথা হতেই পারে, তাই বলে তো চাপিয়ে দিবার কিছু নাই। এই যদি বাংলাদেশের কথাই ভাব তবে – এ দেশটা সবার দেশ। এই দেশের মানুষের ভাষা বাংলা। এই ভাষা টা কোথা থেকে কিভাবে এসেছে তাঁর সাক্ষী ইতিহাস। ভাষার বিবর্তনের মাধ্য দিয়েই ভাষা সমৃদ্ধ হয় হতেই থাকে। সব দেশেই থাকে মাতৃ ভাষা ও কাজের ভাষা। কেউ যদি দাবী করে সংস্কৃত হিন্দুর ভাষা, আরবী মুসলমানের ভাষা, ইংরেজি খ্রিস্টানের ভাষা তবে মাতৃ ভাষা কোনটি? আর এই তিনটিই ভাষার বাহিরের মানুষ, সে কোন ধর্মের মধ্যে না তাই তাঁদের ক্ষতম কর এই যদি সবার মত হয়ে থাকে তবে দেশ থাকে কোথায়!

দেশ তো একটা গাছের মত। কে কি নিবে সে তো তাঁর নিজের বিষয়। তাই বলে হত্যা করে ধ্বংস করে কি এর সমাধান মিলে? যদি মিলত তবে ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এর সমাধান তো হয়ে যাবার কথা ছিল। হয়েছে কি তা?

আসলে সবার দেখা উচিত আমরা কি চাই। শান্তি যদি আমাদের মুল বিষয় হয়ে থাকে তবে সেই বিষয়ে নজর দেয়া দরকার। খুনা-খুনি হানা-হানি যে কোন সমাধান নয় সে বিষয় বোধ করি কম বেশি সবার জানা; তবে কেন এই বিধর্মী বা ভিন্ন মত প্রকাশকারিদের নীধনে মেতে উঠেছি আমরা?

ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন: