সেনাবাহিনী দেশের অন্যতম প্রধান প্রতিরক্ষা বাহিনী। পুলিশ দেশের আইন শাসন প্রতিষ্ঠা ও দুষ্টকে দমন করার জন্য দেশের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বাহিনী। প্রতিটি জনগণের – কি সামরিক কি বেসামরিক – সবার জান ও মালের নিরাপত্তা পুলিশের হাতে । একটি সভ্যসমাজের পরিচিতি সেই সমাজের পুলিশের উপর। পুলিশ জনগণের অতি আদরের এবং বিশ্বস্থ বন্ধু হলো পুলিশ। যে কোন মানুষ বিপদে পড়ে সবার আগে পুলিশের কাছে। কাজেই মানুষ পুলিশকে বিশ্বাস করতে চায় এবং সবচেয়ে বেশি আস্তায় নিতে চায়।
কিন্তু আজকে বুকে সাহস এ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বলতে হয় বর্তমান আইজিপি একই জেলার ও বিভিন্ন কারনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক থাকার কারনে পুলিশ বাহিনীকে একটি বেপরোয়া বাহিনীতে রুপান্তরিত করেছেন। বর্তমান আইজিপির আস্কারা পুলিশ কোন আইনের ধার ধারে না, যা খুশি তাই করে, আদালতকে পর্যন্ত শাসায়, প্রতিটি থানা, তথা কথিত তদন্ত কেন্দ্র এবং দেশের প্রায় প্রতিটি সড়কে বেআইনী চেকপোষ্টগুলি দেশের মানুষের সামনে শুধু ভয়াবহ ভিতিকর কেন্দ্রই নয়, এই গুলি চাদাবাজী, হয়রানী, এক ধরনের ডাকাতি এবং টর্চার শেল হিসাবে জনগণের সামনে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
পুলিশ একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা দেয়া তার অন্যতম দায়িত্ব। দুষ্টের দমন ও সুষ্টের পালন – পুলিশের কাজের প্রধান মোটো। কিন্তু আজকে সেই পুলিশ জনগণের উপর শাসক হিসাবে চেপে বসেছে। প্রতিটি পুলিশের প্রকাশ্য বক্তব্য বর্তমান সরকারকে তারা ক্ষমতায় বসিয়েছে তাই পুলিশকে কিছু বলার ক্ষমতা নাকি সরকারের নাই। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীরাও আজকের দৌড়ের উপরে আছে।
দেশের জনগণ পুলিশের ভয়ে আজকে তটস্থ। কখন কাকে বিনা কারনে এবং মিথ্যা অভিযোগে ধরে নিয়ে গিয়ে আদালতকে ধমকিয়ে রিমান্ডে এনে যে অমানবিক টর্চার চালাবে তা কেউ এখন আঁচও করতে পারে। আমরা পুলিশের ভয়ে সবাই ভীত কেচো হয়ে গিয়েছি। জনগণ এই ভীতিকর অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।
আজকের কক্সবাজারের যৌথ সংবাদ সম্মেলনই প্রমান সেনাবাহিনী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক চিড় ধরছে যা দুর করার জন্য কক্সবাজারে ছুটে গিয়ে সেনাপ্রধানকে পুলিশের আইজির পাশে বসে নিজেকে নামিয়ে আনতে হলো। চরম বাস্তবতা হল বর্তমান আইজিপির আস্কারা ও মদদে সেনাবাহিনীর প্রতি প্রচন্ড বৈরি ও চরম অসৌজন্যমূলক আচরন অব্যহতভাবে করে যাচ্ছে। তারই একটি উৎকৃষ্ট প্রমান চেকপোষ্টে গুলি করে কুকুরের মত একজন সেনা অফিসারকে মারার দু:সাহস দেখিয়েছে!! এখন পর্যন্ত কোন পর্যায়ের পুলিশ কমান্ড হতে দু:খ্য প্রকাশ করা হয় নাই। অথচ এখন বলা হচ্ছে এটি নাকি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা!! যদি বিচ্ছিন্ন ঘটনাই হয় তাহলে পুলিশ কেন তাৎক্ষনিক হত্যা মামলা করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে নাই? বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলে চেকপোস্টের সবাইকে প্রত্যাহার করা হল কে? বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলে ওসিকে কেন প্রত্যাহার করা হল? যে কারন এবং যে যুক্তিতে ওসিকে সরকার প্রত্যাহার করলো সেই একই যুক্তিতে কক্সবাজারের এসপি, চট্রগ্রাম বিভাগের ডিআইজি এবং পুলিশের আইজিপিকে কেন প্রত্যাহার করা হবে না? জনগণ তা জানতে চায়।
মেজর অবঃ আখতারুজ্জামান
প্রাক্তন সংসদ সদস্য
2021-01-30 06:29:31
আপনার মতামত লিখুন :