ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনকে মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন কোয়াড জোটের নেতারা। টোকিওতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত জোটের বৈঠকে এ ঘোষণা দেন তারা। একইসঙ্গে অবাধ ও উন্মুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা জানান জোটটির নেতারা।
চীনবিরোধী জোট হিসেবে পরিচিত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ঘিরে গঠিত কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগের (কোয়াড) শীর্ষ নেতারা মঙ্গলবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে বৈঠকে বসেন। চীনা আধিপত্যের পাশাপাশি চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার নিরাপত্তার ইস্যুটি গুরুত্ব পায় আলোচনায়।
বৈঠকের শুরুতে বক্তব্য দেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় যেন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ফুমিও কিশিদা বলেন, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান জাতিসংঘ সনদের নীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এমন কোনো ঘটনা ঘটতে দেয়া যাবে না। আমরা কঠিন সময় পার করছি। ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বক্তব্যের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজকে প্রথমবারের মতো কোয়াড বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য অভিনন্দন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পরে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর মতো তার বক্তব্যেও গুরুত্ব পায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টি। করোনা মহামারি ও রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে ধস নেমেছে তা পুনরুদ্ধারে ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারিটি-‘আইপিইএফ’ নামের একটি চুক্তির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে জো বাইডেন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব একটি ‘অন্ধকার সময়’ পার করছে। মিত্র দেশগুলোকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে কোয়াডের বৈঠকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একটি অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মোদি বলেন, করোনার বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও আমরা টিকা সরবরাহ, পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়িয়েছি। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় শান্তি আর সমৃদ্ধি এসেছে।
বৈঠকে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়া অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের বক্তব্যে উঠে আসে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি। তিনি বলেন, অবাধ ও উন্মুক্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা গড়ে তুলতে কোয়াড ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের প্রস্তাবে ২০০৭ সালে গঠিত হয় কোয়াড জোট। শুরুর দিকে নিষ্ক্রিয় থাকলেও ২০১৭ সালের পর থেকে জোটটি সক্রিয় হতে শুরু করে।
আপনার মতামত লিখুন :