বিরোধ না থাকলেও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে থেমে নেই হত্যা। গেল ছ’মাসেই ২৫ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ’র গুলিতে। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরও অন্তত ৫০ জন।
ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, মানবিক আচরণ করতে হবে বিএসএফ’কে। পাশাপাশি সীমান্তে নিষিদ্ধ করা জরুরি মারণাস্ত্রের ব্যবহারও। আর বার বার অভিযোগের পরও, নয়াদিল্লি কথা রাখছে না বলে মন্তব্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
ভারতের চারপাশে যে কটি দেশের সীমান্ত হয়েছে তার মধ্যে, সবচেয়ে নির্দিষ্ট ও বিরোধহীন সীমান্ত বাংলাদেশের সঙ্গে। তবুও এই সীমান্তে হত্যার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রতি বছরই প্রাণ যায় বহু নিরীহ বাঙালির।
ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, গরু ব্যবসা ও চোরাকারবারি বন্ধ করতে কঠোর অবস্থানে তারা। কিন্তু মারা যাওয়াদের অনেকেই কৃষক কিংবা ভুলক্রমে সীমান্তের কাছাকাছি চলে যাওয়া সাধারণ মানুষ। তাই ভারতীয় বিশ্লেষকদের পরামর্শ, সীমান্তে অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।
ভারত সিনিয়র সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্য বলেন, কোনোভাবেই সীমান্তে হত্যা মেনে নেয়া যায় না। অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ রক্ত ঝড়ে সীমান্তে। গেলো এক দশকে ৩০০’র বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ, বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরও বেশি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বারেবারে বলার পরও, এই বিষয়টির কোনো সুরাহা করা যাচ্ছে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সেদিনও ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছি। ভুল বোঝাবোঝির কারণেই সীমান্তে গুলি চালানো কমছে না। আমরা সংকট দূর করতে চাই।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হলে, দক্ষিণ এশিয়ার সংকটময় প্রেক্ষাপটে, ঢাকা-নয়াদিল্লি সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, অনেকদিন ধরেই ভারত বলছে, শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনবে সীমান্ত হত্যা, কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। প্রতিশ্রুতি রাখছে না প্রতিবেশী দেশ।
পাকিস্তান, চীন ও নেপালের সঙ্গে ভারতের তীব্র সীমান্ত উত্তেজনা চলছে। তবুও ওই সীমান্তগুলোতে ভারত গুলি চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে না। কুড়িগ্রামে ফেলানী হত্যাসহ আজ পর্যন্ত কোনো সীমান্ত হত্যার বিচার না হওয়ায় দিনে দিনে সমস্যা হয়েছে ঘনীভূত। এ অবস্থায় ধারাবাহিক প্রতিবাদ জানিয়ে, ভারতকে চাপে রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
2021-01-30 06:29:31
আপনার মতামত লিখুন :