বাংলাদেশ তার তিস্তা নদীর সেচ প্রকল্পে চীনের কাছ থেকে ১ বিলিয়ন সহায়তা লাভের যে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে তা এখন নদীটির পানি বণ্টন প্রশ্নে ঢাকা ও দিল্লী মধ্যে আলোচনার মূল ইস্যুতে পরিণত হতে পারে। এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুকনো মওসুমেও তিস্তায় পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ধরে রাখা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব হবে।
ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ইস্যুটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। করোনা ভাইরাসের হুমকি উপেক্ষা করে আকস্মিক ঢাকায় ছুটে যাচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। গত মার্চের পর তার এটি দ্বিতীয় ঢাকা সফর।
তবে এত কম সময়ের মধ্যে, বিশেষ করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময় কেন এই অনির্ধারিত সফর তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে সূত্রগুলো রাজি হয়নি।
বাংলাদেশ রংপুর জেলায় ‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টরেশন’ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীনের কাছে ৮৫৩ মিলিয়ন ডলার চেয়েছে। চীনের এই ঋণ হবে দুই দেশের সম্পর্কে আরেকটি মাইলফলক, যা ভারত-বাংলাদেশ পানিবণ্টন চুক্তির ভাগ্য নির্ধারণ করে দেবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগ আমলে নিতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন, তিস্তা নদীর ব্যবস্থাপনায় চীনের অর্থায়নে একটি মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে আশা করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পাশাপাশি তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সংক্ষিপ্ত এ সফরের সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠক হবে।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় আরও কাছাকাছি এসেছে চীন। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের জন্য নতুন করে অস্বস্তি তৈরি করেছে।
শুকনো মওসুম তথা ডিসেম্বর থেকে মে পর্যন্ত তিস্তায় পানি প্রবাহ পর্যাপ্ত রাখতে ভারতের কাছে দীর্ঘদি ধরে ন্যায্য হিস্যা দাবি করে আসছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে। এ ব্যাপারে দুই দেশ কয়েক বছর আগে চুক্তি সইয়ের উদ্যোগ নিলেও মূলত ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে তা বাস্তবে রূপ নেয়নি।
2021-01-30 06:29:31
আপনার মতামত লিখুন :