নির্বাচন কমিশনের তফশিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। তবে তফশিল হলেও সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে আন্দোলন থেকে পিছু হটছে না বিএনপি। আপাতত চলমান আন্দোলনকে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল পর্যন্ত টেনে নিতে চায় দলটি।
তাই সামনের দিনগুলোতে প্রতি সপ্তাহে দু-এক দিন বিরতি দিয়ে আরও কয়েক দফা হরতাল কিংবা অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে যে কোনো সময় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন নেতারা।
তখন তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতির আলোকে ‘অসহযোগ’ নাম দিয়ে হরতাল ও অবরোধ একই সঙ্গে পালনেরও প্রস্তাব আছে। এজন্য বিদেশিদের তৎপরতার দিকেও নজর রাখছেন নীতিনির্ধারকরা। পাশাপাশি চলমান কর্মসূচিসহ আগামী দিনের আন্দোলনে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড।
বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য। তারা আরও জানান, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। তারা এ সময় পর্যন্ত চলমান আন্দোলনকে টেনে নিতে চান। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাবও বোঝার চেষ্টা করবেন। নির্বাচনের পথে কারা হাঁটলেন তাও স্পষ্ট হয়ে যাবে এই সময়ে। তারপর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে চান। তবে তফশিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ঘেরাওয়ের আলোচনা ছিল। এখন মনোনয়নপত্র দাখিলের পর ‘অসহযোগ’ কর্মসূচির মধ্যেই কমিশন ঘেরাওয়ের কথা আলোচনায় রয়েছে।
তৃণমূল নেতারা জানান, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে দেশব্যাপী গ্রেফতার অভিযান চলছে। যে কারণে বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঘরে কিংবা আত্মীয়ের বাসায়ও থাকতে পারছেন না। ইউনিয়ন থেকে মহানগর পর্যায়েও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়েও গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও প্রতিটি নেতাকর্মী মাঠে থাকার বিষয়ে অনড়। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তারা যে কোনো মূল্যে আন্দোলনের সফলতা চান।
একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, কোন পরিস্থিতিতে কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে তার একটি খসড়াও হাইকমান্ডের কাছে দেওয়া হয়েছে। যতই তফশিল ঘোষণা করা হোক না কেন, নির্বাচন প্রতিহতের জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। আগামী দিনে ঢাকা মহানগরেও কর্মসূচি জোরদারভাবে পালনের নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ীই দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কাজ করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :